Posts

Showing posts from April, 2025

অক্ষয় তৃতীয়া কি? কেন পালন করা হয়? ইতিহাস, তাৎপর্য ও পূজার নিয়ম

Image
অক্ষয় তৃতীয়াকে অনেকে আকতি বা আখা তীজও বলে , যেমন ঝাড়খণ্ডের মান্দা এক বিশেষ হিন্দু ও জৈন উৎসব। এটা প্রতি বছর আসে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয় দিনে এই উৎসব হয়। ভারত , নেপাল ও ঝাড়খণ্ডের কিছু মানুষ একে ভালো দিন মনে করে। অক্ষয় মানে যা কখনো শেষ হয় না। অক্ষয় তৃতীয়া এই বিশেষ দিনে কোনো ভালো কাজ করলে তার ফল সব সময় পাওয়া যায়। তাই একে " সদা উন্নতির দিন " বলা হয়। হিন্দু পঞ্জিকা চাঁদের হিসাবে চলে , তবে তারিখ ঠিক করতে চন্দ্র মাস দেখা হয়। একটা চন্দ্র দিন মাস , পক্ষ ও তিথি দিয়ে বোঝা যায়। মাস বলার সময় দুটো নিয়ম চলে : আমন্ত ও পূর্নিমান্ত। কোনো উৎসব চাঁদের খারাপ সময়ে হলে , এই দুই নিয়মে আলাদা মাসে পড়ে কিন্তু দিনটা একই থাকে। একটা চন্দ্র বছর সূর্যের বছরের থেকে প্রায় এগারো দিন ছোট হয়। তাই অনেক হিন্দু উৎসব ইংরেজি ক্যালেন্ডারে আলাদা দিনে হয়। তখনই আমরা লাভ করতে পারি যখন ভালো কিছু করি , আর যদি খারাপ করি তবে অক্ষয...

ধর্মমতে জন্মদিন পালন

Image
এই সু্ন্দর পৃথিবীতে অনেকেই আমরা আমাদের জীবনে নিজের ও আপনজনদের জন্মতিথি, জন্মদিবস বা জন্মদিন পালন করে থাকি।আধুনিক এই পৃথিবীতে তথা কলি যুগে পরিস্থিতি অনুযায়ী বিভিন্নভাবে ও ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে পালন করে থাকি। যদিও কিছু সংখ্যক ধর্মানুরাগী মানুষ নিজের ইষ্ট কে ভোগ নিবেদন করে প্রসাদ গ্রহণ করেন আবার কেউবা পায়েস বা কেক কেটে নিজেদের জন্মদিন পালন করেন তাছারাও বর্তমানে আমরা অনেকেই নানা রকম রাজকীয় পদ্ধতি জন্মদিন পালন করে থাকি।কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সকল আনন্দ এবং উৎসবের কথা আমাদের মনে থাকলেও , হাজার আড়ম্বরপূর্ণ ব্যস্ততার মাঝে আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তা পালনকর্তা কে ভুলেই যাই। ধর্মমতে জন্মদিন পালন ধর্মমতে জন্মদিন পালনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় গ্রন্থ সমূহের ব্যাখ্যা: জন্মদিনে বৈদিক আচার অনুসারে পরমেশ্বরের কাছে যজ্ঞের মাধ্যমে প্রার্থনা করা আমাদের কর্তব্য। বিদ্যা, তেজ, বলবুদ্ধি ও পথপ্রদর্শন লাভের জন্য, দীর্ঘ ও সুখময় জীবন কামনায়, লাভ-ক্ষতির বিবেচনায় দুষ্কর্ম, দুর্গুণ ও দুর্ব্যবহার ত্যাগ করে সৎকর্ম, সদ্গুণ ও সদাচরণ গ্রহণের উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করা উচিত। আজ আমি এমনই কিছু সহজ ও সংস্কারমূলক বৈদিক যজ্ঞমন্ত্র উল্লেখ করছি, য...

ঈশ্বর এক হলে এত দেব-দেবী কেন ?

Image
হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর একটাই, কিন্তু তাঁর নানা রূপ আর শক্তির কারণে অনেক দেব-দেবীর ধারণা তৈরি হয়েছে। মূল কথা হল, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই সবকিছুর উৎস, কিন্তু তাঁকে বোঝার জন্য আমরা বিভিন্ন রূপে দেবতাদের পূজা করি।  এটা বলা হয় যে, ঈশ্বরের একত্বের ধারণা একাত্ববাদ বা অদ্বৈতবাদ হিসেবে পরিচিত। এখানে ঈশ্বর এক এবং সব জায়গায় বিরাজ করেন। কিন্তু বিভিন্ন রূপে ঈশ্বরের প্রকাশের জন্য দেব-দেবীদের আলাদা আলাদা পরিচয় তৈরি হয়েছে। যেমন, লক্ষ্মী ধন ও সৌভাগ্যের দেবী, শিব ধ্বংসের দেবতা, সরস্বতী জ্ঞান এবং বুদ্ধির দেবী, আর বিষ্ণু সৃষ্টির রক্ষক।   ঈশ্বর এক দেব দেবী অনেক  তাছাড়া, দেবতারা মানুষের নানা কাজে সাহায্য করেন—সৃষ্টি, পালনা, ধ্বংস, দান, শিক্ষা, যুদ্ধ, শান্তি, স্বাস্থ্য ইত্যাদি। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি এবং ধর্মের কারণে দেব-দেবীর সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু সবই আসলে এক ঈশ্বরের নানা রূপ এবং শক্তির প্রকাশ।  এজন্য, হিন্দু ধর্মে একটা ঈশ্বরকে নানা নামে এবং রূপে পূজা করা হয়, যাতে তাঁর বিভিন্ন দিক এবং শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস প্রকাশ পায়। হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর (পরম ব্রহ্ম) এক, কিন্তু সেই ঈশ্বরের বিভিন্ন...

হিন্দু মহিলাদের মাথায় ঘোমটা দেওয়ার প্রচলন

Image
পৃথিবীর সৃষ্টির শুরু থেকেই সনাতন ধর্মে কিছু প্রথা চলে আসছে। বিশেষ করে বিবাহিত মহিলাদের ঘুমটা দেওয়ার , যা আমরা ঘোমটা বা ঘুংটি নামেও জানি। এটা একটি ঐতিহাসিক ধর্মীয় প্রথা , কিন্তু সব অঞ্চলে এটা একরকম নয়। প্রথার রূপ ও মানে সমাজ , স্থান এবং সময়ের সাথে বদলাতে পারে। আমাদের হিন্দু ধর্মে কঠোর কোন বিধি নেই , বরং প্রতিটি মানুষকে স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ঈশ্বরের বিধান সমান। এই ধর্মে সৃষ্টিকর্তা ছেলেদের ও মেয়েদের জন্য কোনো পক্ষপাতিত্ব করেননি।   মহিলাদের মাথায় ঘোমটা এখন আমরা ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে এ বিষয়ে প্রমাণ খুঁজবো  ঋকবেদ ৮/৩৩/১৯  অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, হে নারী ও পুরুষগণ তোমাদের দৃষ্টি সর্বদা ভদ্র ও নম্র থাকার পাশাপাশি তোমাদের পোশাক হবে শালিন। হে নারী ও পুরুষগণ সংযত হোক তোমাদের চলাফলা এবং পোশাকে আবৃত হোক তোমাদের দেহ তৎসঙ্গে পরিত্যাগ কর তোমাদের নগ্নতা।  রামায়ণে শ্রী রামচন্দ্র বলেছেন, শুধুমাত্র পোশাকেই শালীনতা নয় বরং চরিত্রই একজন নারীর প্রকৃত আবরণ। এই উক্তিটি পাওয়া গি...