মানবজীবনে সুখ আনে গাছ—কেন?
ভূমিকা: মানবজীবন ও প্রাকৃতিক পরিবেশ একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। গাছ শুধু আমাদের পরিবেশকে সুন্দর করে না, বরং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। গাছের উপস্থিতি জীবনে সুখ, শান্তি ও ইতিবাচক শক্তি আনে।
![]() |
| মানবজীবনে সুখ আনে গাছ |
গাছপালা মানব সুখ শান্তি তথা অশান্তির কারণ হতে পারে তাতে সন্দেহ নেই। নিম্নে কোন গাছ, কোনফুল, কোনফল বাড়িতে থাকলে কিরূপ ফল প্রদান করে তা নিম্নে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হল। গৃহবাড়িতে নারকেল, সুপারি, শালগাছ, বেলগাছ, নাগকেশর, তুলসী ও অশোক বৃক্ষ থাকলে সেই
সুখের মূলে বৃক্ষ বা গাছের অবদান
বাড়িতে বসবাসকারী প্রত্যেকের জীবনে সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি আসে। আজীবন পরিপূর্ণ আনন্দ ও তৃপ্তিলাভকরে। বিপরীতে নারকেল, বেল, সুপারি ও অশোকবৃক্ষ কেটে ফেললে সেই সংসারে অশান্তি, অনটন, অর্থনাশ সহ সার্বিক ক্রমাবনতি দেখা দেয়। বসতগৃহের উপর বেল গাছের ছায়া মানে মা লক্ষ্মীর কৃপা বর্ষণ বোঝায়। এসকল গৃহে মা লক্ষ্মী স্থায়ী ভাবে বসবাস করে। গৃহ ছোয়া পলাশ ও কামিনী ফুল গাছ সংসার সমাজ সহ সার্বিক অবস্থার ক্রমোন্নতি সহ সুনাম, যশ, খ্যাতি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। ঈশান কোনে তুলসী। বৃক্ষ বা গৃহ মধ্যে তুলসীবৃক্ষ কর্মে সফলতা ছাড়াও মনোবাঞ্চা পূরন হয়। ঈশান ও নৈঋত কোনে সুপারিগাছ থাকলে সেই গৃহে পুরুষানুক্রমে অর্থ, ধন, সম্পদ, পুত্র পৌত্রাদি বৃদ্ধি পায় ছাড়াও আধ্যাত্মিক ও আত্মিক শক্তি লাভ হয়।
গৃহ বাড়ির মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, লেবু ও কুল গাছ থাকলে সেই গৃহ বাড়িতে আত্মীয় পরিজন পুত্র। পৌত্রাদিতে পরিপূর্ণ থাকে ছাড়াও দৈনন্দিন জীবনে সুখ, শান্তি, আনন্দ ও সৌভাগ্য লাভ হয়। এক কথায় গৃহশান্তি বজায় রাখতে উক্ত গাছগুলির অবদান অনস্বীকার্য। অবশ্য গাছ গুলি ঘর থেকে বের হতে ডানপার্শ্বে থাকা চাই। গৃহের উত্তর পার্শ্বে গৃহ ছোয়া কলাগাছ ক্ষতির কারণ। গৃহবাড়ির পূর্বে অথবা দক্ষিণ পার্শ্বে বা কোনে জাম ও আনারস গাছ থাকলে আত্মীয়, স্বজন, বন্ধু বান্ধব বৃদ্ধি পায় ছাড়াও বন্ধু ও আত্মীয় দ্বারা সার্বিক কল্যাণ হয়। বাড়িতে কুশফল গাছ থাকলে সেই গৃহে বসবাসরতরা কোন অপরিচিত লোকের মাধ্যমে উপকৃত হয় ছাড়াও মধ্যবয়সের পর এদের জীবনে হটাৎ পরিবর্তন আসে। এবং সংসার সমাজে বিরল সম্মান ও প্রতিষ্ঠা লাভ করে জগৎখ্যাত হয়।
বাড়ির মধ্যে তাল ও তেতুল বৃক্ষু একসঙ্গে মিলিত অবস্থায় থাকলে সেই গৃহে নিত্য আশান্তি ও কলহ লেগে থাকে। সন্তানের কারনে তীব্র তীব্র মনোকষ্ট ছাড়াও সন্তান শোক নির্দেশ করে। সেই সঙ্গে যদি তাল, তেতুল, নারকেল এই তিন গাছ একসঙ্গে ছুয়ে থাকে তাহলে তা আরও অশুভ। এরূপ থাকলে সেই গৃহ শ্বশ্মান হবে তাতে সন্দেহ নেই। এসব গাছ বাড়িতে রাখতে নেই। তাল বৃক্ষ গৃহবাড়িতে থাকলে সেই গৃহে অপদেবতা বা অপআত্মার ভর করে। অগ্নিকোনে গৃহছোয়া তালবৃক্ষ অগ্নি অথবা বজ্রভয়ের কারণ। গৃহ বাড়িতে পদ্ম, অপরাজিতা, বকুল, করবী, চন্দ্রমল্লিকা, কনকচাঁপা, দেবদারু, লেবু, কমলালেবু, আমলকি, ডালিম, জয়ন্তী, কেতকী, টগর, টগর, আকন্দ ও অপরাজিতা গাছ থাকলে সেই সেই গৃহে গৃহে বসন বসবাসরতদের দিনে দিনে শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। এই বাড়িতে কখনই অর্থ, অন্ন ও বস্ত্রের অভাব হয় না। বাড়ির মধ্যে হলুদ গাছ থাকলে গৃহীর সুখ, শান্তি, সৌভাগ্য ও মানসিক আনন্দলাভ হয়। বসত ঘরের চালের উপর করবীফুল গাছ থাকলে সেই গৃহে স্বয়ং লক্ষ্মী নারায়নের স্থায়ী বসবাস হয়। সুখ, শান্তি ধন ঐশ্বর্য্যে পরিপূর্ণ হয় গোটা সংসার।
গৃহ বাড়িতে খেজুর, ডুমুর, মনষা, বয়ড়া, হরিতকী, ধুতরো, খিরখেজুর সহ যে কোন কাঁটাগাছ থাকলে সেই গৃহে বসবাসরতদের জীবনে সবসময় অশান্তির তীব্রঅনল জ্বলতে থাকে। আয়উন্নতি লোপ পায় ছাড়াও সঞ্চিত অর্থ কপূরের ন্যায় বিনাশ হয়। উক্ত গাছগুলি জীবিত অপেক্ষা মৃত অবস্থায় থাকলে তা আরও ভয়ানক আকার ধারন করে। নিম গাছ গৃহমধ্যে বা গৃহের উপরে থাকা শুভ ও কল্যানকর। গৃহশান্তি বজায় রাখতে নিমগাছের অবদান অনস্বীকার্য।
গৃহবাড়ির মধ্যে ডুমুর, বট ও বাঁশগাছ থাকলে সেই গৃহে নানান অমঙ্গল ছাড়াও অকালমৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। মানসিক বিকার গ্রন্থ লোকের বাস এরূপ গাছযুক্ত বাড়িতে। বসত ঘরের উপর শুধুমাত্র বাঁশবৃক্ষ থাকলে সেই গৃহে বসবাসরতদের মধ্যে কোনরূপ আত্মীয়প্রীতি থাকে না ছাড়াও ভাগ্যন্নতিতে প্রবল বাঁধা পায়। বটগাছ মোটেও শুভপ্রদ নয়। এটি দীর্ঘ স্থায়ী মামলা মকদ্দমায় অর্থ সম্পদ ও সম্পত্তি নাশের কারন। লাউ, কুমড়া, শষা, কাকরোল, ঝিঙ্গেগাছ গৃহবাড়িতে থাকা মঙ্গলকর। এতে লক্ষ্মীর কৃপা লাভ হয়। ধোন্ধল ও পটোল গাছ থাকা মারাত্মক অশুভ। গৃহে নিত্য কলহ ছাড়াও কলহ জনিত কারণে আত্মহত্যার কারণ এই পটোল ও ধোন্ধল গাছ। আফলন্ত চারা গাছ বা নার্সারীতে বিভিন্ন গাছ থাকা শুভকর। আফলন্ত চারাগাছে কোনরূপ শুভাশুভ ফল প্রদান করে না।
তরুলতা বাদে সে কোন লতাগৃহ বাড়িতে থাকা অমঙ্গলকর এতে গৃহ শান্তি বিনষ্ট ছাড়াও অযথা ঝামেলায় জড়িয়ে সর্বশান্ত হতে হয়। গৃহবাড়িতে তরুলতা থাকলে সেই পরিবারে নিবিড় বন্ধন সৃষ্টি হয়। গৃহবাড়িতে তরুলতা পরিবারে নিবিড় বন্ধন সৃষ্টি করে। ভূমিকুস্মান্ড, মিষ্টি আলু, টুইগাছ ও পানগাছ থাকলে সেই গৃহে জন্ম গ্রহনকারী শিশুরা একদিন প্রতিষ্ঠা পায়। পায়। টবে লাগানো বিভিন্ন দর্শনীয় গাছপালা কোনরূপ ফল প্রদান করে না।
Q1: গাছ মানবজীবনে কেন গুরুত্বপূর্ণ?
A1: গাছ আমাদের শারীরিক, মানসিক এবং পরিবেশগত সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
Q2: গাছ কীভাবে সুখ আনতে পারে?
A2: সবুজ পরিবেশ এবং প্রকৃতির সংস্পর্শ মানসিক শান্তি দেয়, চাপ কমায় এবং ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করে।
Q3: ঘরে কোন ধরনের গাছ রাখা উচিত?
A3: ফিকাস, মনস্টেরা, পট উদ্ভিদ বা ছোট Indoor Plant মানসিক শান্তি এবং পরিবেশ সুস্থ রাখতে সহায়ক।
Q4: গাছের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিবেশ সচেতনতা কেমন হওয়া উচিত?
A4: গাছ রক্ষা করা, পরিচর্যা করা এবং অতি সংরক্ষণমূলক ব্যবহার মানসিক ও সামাজিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
