হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর একটাই, কিন্তু তাঁর নানা রূপ আর শক্তির কারণে অনেক দেব-দেবীর ধারণা তৈরি হয়েছে। মূল কথা হল, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই সবকিছুর উৎস, কিন্তু তাঁকে বোঝার জন্য আমরা বিভিন্ন রূপে দেবতাদের পূজা করি। এটা বলা হয় যে, ঈশ্বরের একত্বের ধারণা একাত্ববাদ বা অদ্বৈতবাদ হিসেবে পরিচিত। এখানে ঈশ্বর এক এবং সব জায়গায় বিরাজ করেন। কিন্তু বিভিন্ন রূপে ঈশ্বরের প্রকাশের জন্য দেব-দেবীদের আলাদা আলাদা পরিচয় তৈরি হয়েছে। যেমন, লক্ষ্মী ধন ও সৌভাগ্যের দেবী, শিব ধ্বংসের দেবতা, সরস্বতী জ্ঞান এবং বুদ্ধির দেবী, আর বিষ্ণু সৃষ্টির রক্ষক।
![]() |
ঈশ্বর এক দেব দেবী অনেক |
তাছাড়া, দেবতারা মানুষের নানা কাজে সাহায্য করেন—সৃষ্টি, পালনা, ধ্বংস, দান, শিক্ষা, যুদ্ধ, শান্তি, স্বাস্থ্য ইত্যাদি। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি এবং ধর্মের কারণে দেব-দেবীর সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু সবই আসলে এক ঈশ্বরের নানা রূপ এবং শক্তির প্রকাশ। এজন্য, হিন্দু ধর্মে একটা ঈশ্বরকে নানা নামে এবং রূপে পূজা করা হয়, যাতে তাঁর বিভিন্ন দিক এবং শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস প্রকাশ পায়। হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর (পরম ব্রহ্ম) এক, কিন্তু সেই ঈশ্বরের বিভিন্ন রূপ ও শক্তির প্রকাশ হিসেবে বিভিন্ন দেব-দেবীর উপাসনা করা হয়।
ঈশ্বর এক দেবদেবী অনেক এ বিষয়ে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা:
শ্রীমদ্ভগবদগীতার
নবম অধ্যায়ের ১৬ থেকে ১৯তম
শ্লোকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ঘোষণা করেছেন:
"আমিই
শ্রৌত যজ্ঞ, স্মার্ত যজ্ঞ, পিতৃযজ্ঞ এবং ঔষধিস্বরূপ অন্ন।
আমিই হোমযজ্ঞের ঘৃত, আমিই অগ্নি।
এই জগতের পিতা-মাতা, বিধাতা
ও পিতামহ—সমস্ত জ্ঞেয় বস্তু এবং সকল পবিত্র
পদার্থ আমিই। আমি ব্রহ্মবাচক 'ওঁকার',
আমিই ঋগ্বেদ, সামবেদ ও যজুর্বেদের স্বরূপ।
আমিই গতি, আমিই প্রভু,
শুভ ও অশুভ, আমিই
রক্ষক, স্রষ্টা ও সংহারক। আমিই
ভূমি থেকে জল আকর্ষণ
করি এবং আমিই পুনরায়
জল বর্ষণ করি। আমিই জীবের
জীবন ও মৃত্যু।"
অর্থাৎ,
এখানে স্পষ্ট যে ঈশ্বর কেবলমাত্র
সৃষ্টিকর্তাই নন, বরং তিনি
সমস্ত কিছুতেই বিরাজমান। তিনি সর্বব্যাপী ও
সর্বত্র বিদ্যমান। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে একমাত্র
সত্য 'সত্তা' হলেন ঈশ্বর, আর
অন্য সবকিছু তাঁরই বহুরূপী প্রকাশ। অর্থাৎ, সমস্ত প্রাণী এবং দেবতাগণও একই
ঈশ্বরের গুণের বিভিন্ন প্রকাশমাত্র।
গীতার
চতুর্থ অধ্যায়ের ১১তম শ্লোকে ভগবান
শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ঘোষণা করেছেন:
"যে
যথা মাং প্রপদ্যন্তে তাং
স্তথৈব ভজাম্যহম্।
মম বর্ত্মানুবর্তন্তে মনুষ্যাঃ পার্থ সর্বশঃ ॥"
অনুবাদ:
হে অর্জুন, মানুষ যেভাবে আমাকে ভজনা করে, আমি
তাকে সেভাবেই কৃপা দান করি।
সকল মানুষই বিভিন্ন পথে আমারই অনুসরণ
করে।
ব্যাখ্যা:
এই শ্লোকের মাধ্যমে ভগবান স্পষ্ট করেছেন যে, মানুষ তাঁকে
বিভিন্ন রূপে ও বিভিন্ন
উপায়ে উপাসনা করে। সহজ ভাষায়,
আমরা ঈশ্বরের বিভিন্ন শক্তিকে বিভিন্ন দেবদেবীর রূপে পূজা করি,
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেই সমস্ত পূজা-আরাধনা একই পরম সত্তারই
উপাসনা। আমরা আমাদের চারপাশে
যেসব দেবদেবীর পূজা করি বা
দেখি, সেগুলো সবই ঈশ্বরের বিভিন্ন
গুণ ও শক্তির প্রকাশমাত্র।
ভগবান এক ও অদ্বিতীয়,
কিন্তু তাঁরই অসীম রূপের বৈচিত্র্যে
মানুষ তাঁকে বিভিন্নভাবে ভজনা করে।
![]() |
ঈশ্বর ও দেবদেবীর ছবি |
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঈশ্বর এক কিন্তু দেবদেবী এত বেশি হিন্দু ধর্মের বৈশিষ্ট্য:
হিন্দু
ধর্মের বৈশিষ্ট্য বেশ আকর্ষণীয়। যদিও
হিন্দুরা এক ঈশ্বরকে মানতে
বিশ্বাসী, তবুও অনেক দেবদেবীর
কথাও বলা হয়। হিন্দু
ধর্মের কিছু মূল পয়েন্ট
হলো:
১. এক ঈশ্বরবাদ: হিন্দু
ধর্মে পরম ব্রহ্ম, যিনি
সৃষ্টির স্রষ্টা, এক এবং অদ্বিতীয়।
বলা হয়, ঈশ্বর একাধিক
দেবতাকে তার নানা রূপে
প্রকাশ করেন।
২. অদ্বৈতবাদ: হিন্দু ধর্মে সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকর্তা একই।
ব্রহ্মসূত্রে বলা হয়েছে, জীবই
ব্রহ্ম, অর্থাৎ জীব ও ব্রহ্ম
একই। বেদান্ত দর্শনে বলা হয়, সব
কিছুই ব্রহ্ম।
৩. বহুদেববাদ সম্পর্কে বলা হয়, হিন্দুধর্মে তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর উপাসনা করা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দুরা বিভিন্ন দেবতার পূজা করে আসছে। তবে এগুলো প্রকৃতপক্ষে একই পরম সত্তার বিভিন্ন প্রকাশমাত্র। ব্রহ্মা (স্রষ্টা), বিষ্ণু (পালনকর্তা), শিব (সংহারক) – এই ত্রিদেব থেকে শুরু করে অগ্নি, ইন্দ্র, সূর্য, চন্দ্র প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দেবতা; আর কালী, দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, হনুমান, মনসা, শীতলা প্রমুখ গুণাবলীর দেবী ও দেবতা – সবই একই সর্বোচ্চ সত্তার বিভিন্ন রূপ। বেদে বলা হয়েছে, "একম সত্ বিপ্রা বহুধা বদন্তি" (সত্য একই, জ্ঞানীরা তাকে বিভিন্ন নামে ডাকে)। অর্থাৎ, বহু দেবতার উপাসনা আসলে এক ঈশ্বরেরই বিভিন্ন গুণ ও শক্তির আরাধনা।"
৪. অবতারবাদী: অবতারবাদ হলো ধারণা যে
ঈশ্বর মানুষ এবং অন্য মূর্তি
নিয়ে পৃথিবীতে আসতে পারেন। ঈশ্বরের
অবতার হওয়ার উদ্দেশ্য হল মানবজাতির স্বার্থে
কাজ করা। শ্রীবিষ্ণুর দশটি
অবতার হিন্দু ধর্মে বেশ পরিচিত। এগুলো
হলো: মৎস্য, কূর্ম, বরাহ, নৃসিংহ, বামন, পরশুরাম, রামচন্দ্র, বলরাম, বুদ্ধদেব এবং কল্কি।
৫. কর্মবাদী: কর্মবাদ বলতে বোঝায়, যে
যেমন কাজ করবে, সে
তেমন ফল পাবে। অর্থাৎ
'যেমন কর্ম, তেমন ফল'—এই
কথাটিই কর্মবাদের মূল ধারণা।
৬. জন্মান্তরবাদী: জন্মান্তরবাদ বা পুনর্জন্ম বললে
বুঝায় মৃত্যুর পর আবার জন্ম
নেওয়া। হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস করে,
মানুষের মৃত্যুর পরে আত্মা নতুন
দেহে জন্ম নেয়। আত্মা
চিরন্তন এবং শাশ্বত।
৭. বর্ণবাদী পক্ষ থেকে, মানুষের
বর্ণ মূলত জন্মের ওপর
নির্ভর করে। হিন্দু ধর্মে,
মানুষের গুণ ও কাজের
ভিত্তিতে চারটি বিভাগে ভাগ করা হয়।
এগুলো হলো:
ক) ব্রাহ্মণ: এদের উৎপত্তি পরম
ব্রহ্মের মুখ থেকে। এদের
কাজ হলো আদর্শ ও
ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি বৈদিক কাজ করা।
খ) ক্ষত্রিয়: এদের উৎপত্তি পরম
ব্রহ্মের বাহু থেকে। এরা
শাসক বর্ণের, এবং দেশরক্ষা, সাহস,
যুদ্ধ পরিচালনা এদের মূল দায়িত্ব।
গ) বৈশ্য: এদের উৎপত্তি পরম
ব্রহ্মের জানু থেকে। কৃষিকাজ,
ব্যবসা, গোরক্ষার মতো কাজ এদের
মূল কাজ।
ঘ) শূদ্র: এদের উৎপত্তি পরম
ব্রহ্মের পা থেকে। শূদ্রদের
কাজ হলো অন্য বর্ণের
মানুষের সেবা করা।
হিন্দুধর্মে
মানুষের জন্মগত বর্ণের পাশাপাশি জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে চারটি ভাগ আছে। এগুলোকে
আশ্রম বলা হয় এবং
চারটিকে চতুরাশ্রম বলা হয়। ভাগগুলো
হলো:
ক) ব্রহ্মচর্য: ছাত্রজীবন।
খ) গার্হস্থ্য: সংসার জীবন।
গ) বানপ্রস্থ: সংসার থেকে অবসরের জীবন।
ঘ) সন্ন্যাস: ঈশ্বরের ধ্যান করার জন্য সংসার থেকে বেরিয়ে যাওয়া।
৮. মোক্ষমবাদী: মোক্ষ মানে মহামুক্তি বা
সীমাহীন মুক্তি। যদি একজন মানুষ
ভুল ধারণা আর মিথ্যার প্রভাব
কাটিয়ে উঠতে পারে, তাহলে
সে সত্য আর অসত্যের
পার্থক্য বুঝতে পারে। একজন ব্যক্তি তাঁর
সাধনা ও নিষ্কাম কর্মের
মাধ্যমে এই জীবনে মোক্ষ
পেতে পারেন।
৯. আশাবাদী: জীবনে দুঃখ আসবে, এটা
স্বাভাবিক। ধর্মীয় নির্দেশনা অনুসরণ করে এই দুঃখ
থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এখানে দুঃখ মুক্তির চারটি
পথ উল্লেখ করা হয়েছে: জ্ঞান
মার্গ, কর্ম মার্গ, যোগ
মার্গ, ভক্তি মার্গ।
১০.
ঈশ্বরের বিশেষ রূপ: ঋগবেদের পুরুষ
সূত্রে বলা হয়েছে, পরম
পুরুষ বিশ্বজুড়ে থাকলেও তিনি বিশ্ব থেকে
দশাঙ্গুলের বেশি। তিনি একদিকে বিশ্বব্যাপী,
অন্যদিকে বিশ্ব থেকে ঊর্ধ্বে।
পরমত
সহিষ্ণুতা এই ধর্মের প্রধান
বৈশিষ্ট্য। হিন্দু ধর্মে আত্মসুখ ও নিজস্ব স্বার্থ
ত্যাগ করে সকলের জন্য
দায়িত্ব পালন করতে বলা
হয়েছে।
বিভিন্ন দেব-দেবীর উপাসনা করা হয় এই ধারণার মূল কারণ কয়েকটি—
১. ব্রহ্ম এক, তবে বহুরূপী
উপনিষদে বলা হয়েছে:
"একং সদ্ বিপ্রা বহুধা বদন্তি"
(অর্থ: সত্য এক, জ্ঞানীরা তাকে বিভিন্ন নামে ডাকে)।
হিন্দু দর্শনে ঈশ্বর নিরাকার ও নির্গুণ (নির্গুণ ব্রহ্ম) আবার সাকার ও সগুণ (সগুণ ব্রহ্ম) হিসেবেও পূজিত হন। তাই একজন ভক্ত ঈশ্বরকে যেভাবে অনুভব করতে চান, সেভাবেই তাঁকে পূজা করা যায়।
২. বিভিন্ন শক্তির প্রকাশ
হিন্দু ধর্ম মতে, ঈশ্বরের বিভিন্ন শক্তির ভিন্ন ভিন্ন রূপ রয়েছে। যেমন—
ব্রহ্মা – সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু – পালনকর্তা, শিব – সংহারকর্তা,এছাড়াও লক্ষ্মী (ধন ও সমৃদ্ধির দেবী), সরস্বতী (জ্ঞান ও সংগীতের দেবী), দুর্গা (শক্তির প্রতীক) প্রভৃতি দেব-দেবী বিভিন্ন গুণের প্রতিফলন।
৩. বিভিন্ন সম্প্রদায় ও উপাসনা পদ্ধতি
হিন্দু ধর্মে বহু সম্প্রদায় রয়েছে, যেমন—
শৈব (শিবকে প্রধান বলে মানে)
বৈষ্ণব (বিষ্ণুর উপাসক)
শাক্ত (দেবী দুর্গা বা কালীকে প্রধান বলে মানে)
প্রত্যেক সম্প্রদায় তাদের উপাস্য দেবতার আলাদা রূপ তৈরি করেছে।
৪. ব্যক্তিগত ভক্তি ও সম্পর্ক
ভক্তরা তাদের ঈশ্বরকে নিকটবর্তী ও সম্পর্কযুক্ত করে দেখতে চান। তাই কেউ কৃষ্ণকে প্রেমিকরূপে (রাধা-কৃষ্ণ), কেউ মাতৃরূপে (দুর্গা, কালী), আবার কেউ আশ্রয়দাতা বা গুরু হিসেবে উপাসনা করেন।
৫. পুরাণ ও কাহিনির বৈচিত্র্য
হিন্দু পুরাণগুলো (রামায়ণ, মহাভারত, ভাগবত পুরাণ) বিভিন্ন দেব-দেবীর মহিমা ও লীলাকে ব্যাখ্যা করেছে। এতে মানুষের মনে তাঁদের আলাদা আলাদা রূপের প্রতি ভক্তি জন্মেছে।
সব দেবদেবী কিন্তু ঈশ্বর নন, এটা মনে রাখা জরুরি। নির্গুণ ঈশ্বর মানে, তিনি সমস্ত গুণের অন্ধকার; কিন্তু সেই একই ঈশ্বর সগুণও, কারণ তিনি চাইলে যে কোনো গুণ ধারণ করতে পারেন এবং তা প্রকাশও করতে পারেন। অতএব, দেবদেবী হলেন এই গুণগুলোর রূপ। ঈশ্বর নিরাকার, কিন্তু কোন রূপে আসতে পারেন, কারণ তিনি অসীম ক্ষমতাসীন।
ঈশ্বরের শক্তির সগুণ রূপগুলোর মধ্যে নবদুর্গা, কালী, এবং কার্তিক রয়েছে। বিদ্যা ও সিদ্ধির প্রকাশ সরস্বতী এবং গণেশ। ঐশ্বর্যের রূপ লক্ষ্মী এবং কুবের। মৃত্যুর সগুণ রূপে কালভৈরব এবং যম।
ঈশ্বর সৃষ্টি করেন ব্রহ্মা, পালন করেন বিষ্ণু, এবং প্রলয় করেন শিব। পৃথিবীতে আলো ধরানোর সময় চাঁদ ও সূর্যের রূপে তিনি হাজির হন। তিনি পঞ্চভূতের রূপে—যেমন বায়ু, জল, আগুন, মাটি—নিরাকার ঈশ্বরের সাকার গুণ প্রকাশিত হয়।
ঐতরেয় উপনিষদ ১.১-এ লেখা আছে, সৃষ্টির আগে পরমআত্মা ছিলেন, আর কিছু ছিল না। তখন তিনি ভাবলেন, আমার থেকে এই জগৎ তৈরি হবে। তাই এই বিশ্বে যা কিছু আছে, সবই ঈশ্বরের অংশ, এবং প্রতিটি দেবদেবী এক একটি অংশ।
শ্রী কৃষ্ণের বিশ্বরূপের বহু মাথা রয়েছে, আর প্রতিটি মাথা একটা দেবতা হিসেবে এমনকি ঈশ্বরের গুণের প্রকাশ। অর্জুন বলেছিল, শ্রী কৃষ্ণের বিশ্বরূপের কোনো সীমা নেই, ফলে ঈশ্বরের গুণও অসীম।
এজন্য বলা হয়, ঈশ্বরই ব্রহ্মা, বিষ্ণু, ও শিব। দেবদেবী অনেক, কিন্তু ঈশ্বর এক। এভাবেই দেবদেবী ভক্তি এক জাতির অনেক দৃষ্টিকোণ।
(১) বিষ্ণু নামের উৎপত্তি বিস্তার থেকে, অর্থাৎ তিনি সবদিকে বিস্তৃত।
(২) শিবের নামের অর্থ হলো শয়ন, মানে তিনি সকল কিছুর মধ্যে আছেন।
তাহলে, বহু দেবোপাসক হলেও আসলে সবাই একই ঈশ্বরকে worship করেন।
উপসংহারে, হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর এক; কিন্তু গুণের ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশের কারণে বিভিন্ন দেবদেবী পূজিত হয়। এগুলো মূলত এক ঈশ্বরের প্রতি বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি। দেবদেবীদের আচার আচরণ আমাদের আদর্শ প্রতিস্থাপন করে, আর প্রতিমা হচ্ছে এর একটি প্রতীক।
আমরা যত দেবদেবীর পূজা করি না কেন, সবকিছুর পেছনে সেই এক ব্রহ্ম—তিনি এক আর অদ্বিতীয়।
0 Comments